5 Simple Statements About poddoja Explained
আমির জবাবে কিছু বলল না। চুপচাপ সরে গেল। অন্যদিকে ফিরে শুয়ে রইলো। পদ্মজা আমিরের পিঠের দিকে তাকায়। বুকটা হাহাকার করে উঠে। এতক্ষণ তো সে শক্তই ছিল। আমিরের প্রতি তার বিন্দুমাত্র ভালোবাসা আসেনি,মায়া আসেনি। এখন কেন এমন হচ্ছে! আমিরের সাথে সাথে নিজের প্রতিও ঘৃণা চলে আসে। হাজার মেয়ের জীবন নষ্ট করা মানুষটাকে সে এখনো ভালোবাসে!
এই হলো পদ্মজার তিন সন্তানের মা হওয়ার গল্প। সিলেটে তাকে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। সব সমস্যা পেরিয়ে আজ সে এক বেসরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষিক। বিশাল চা বাগানের মধ্যিস্থলে এক কোয়ার্টারে তারা থাকে। তাদের বাড়িটি এক তলা।
গোপনে আবেগ লুকিয়ে তিনি বজ্রকণ্ঠে প্রশ্ন করলেন, ‘কী লুকোচ্ছিস? হানিফের সামনে কেন যেতে চাস না? সে কী করেছে? ‘
নুড়ি বললো,' তাহলে আরো বেশি রাগ করবে। আরো বেশি কষ্ট পাবে।'
মনে ব্যথা নিয়ে মুখ গুমট করে তারা দুজন খেল। খাওয়াদাওয়া শেষ করে তিনজন ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ে। পদ্মজা প্রতিদিন ঘুমাবার পূর্বে তাদের গল্প বলে। গত এক মাস ধরে পদ্মজা একটা গল্প বলছে। গল্পটা এক দুষ্টু রাজা ও এক মিষ্টি রানির। ভালোবাসা সত্ত্বেও রানি রাজাকে খুন করে। তারপর রানির কারাদণ্ড হয়। কারাদণ্ড হওয়ার পর কখন মুক্তি পেল?
আমিনার কথা শুনে ফরিনার বিন্দুমাত্র রাগ হয়নি। বাবুর নিষ্পাপ মুখটা দেখে তিনি অভিভূত হয়ে পড়েন। সারা মুখে গুচ্ছ গুচ্ছ মায়া। এই মায়াময় শ্যামবর্ণের মুখ দেখে তিনি যেন পিছনের সব কষ্ট ধামাচাপা দিয়ে দিতে পেরেছিলেন। আদর করে কোলে নিয়ে ডেকেছিলেন,’আমার বাবু।’
___________ আমি পদ্মজা পর্ব ১ ___________ টিন দেয়ালের কাঠের ঘড়ির কাঁটায় সকাল দশটা বাজল মাত্র। এখনো পদ্মজা উঠল না। হেমলতা মেয়েদের রুমে ঢুকেন। পদ্মজা দু’হাত ভাঁজ করে ঘুমাচ্ছে। জানালার পর্দা ভেদ করে আসা আলতো পেলব রোদ্দুরের check here স্পর্শে পদ্মজার মসৃণ, পাতলা ঠোঁট, ফর্সা ত্বক চিকচিক করছে। হেমলতা বিসমিল্লাহ বলে,তিনবার ফুঁ দেন মেয়ের শরীরে। গুরুজনরা বলেন, মায়ের নজর লাগে বেশি। নজর কাটাতে বিসমিল্লাহ বলে ফুঁ দিতে হয়। হেমলতার মায়া লাগছে পদ্মজার ঘুম ভাঙ্গাতে। তবুও আদুরে গলায় ডাকলেন, ‘পদ্ম। এই পদ্ম…’
নুড়ি কথা শেষ করে হাত তালি দিল। যেন সব সমস্যা শেষ! নুহাশ ভ্রু কুঁচকে বললো,'মা,পা ধরে ক্ষমা চাওয়া পছন্দ করে না।'
‘ বুবু…বাড়ি আন্ধার ক্যান!বাত্তি-টাত্তি জ্বালাও।’ হানিফের কণ্ঠ।
'শয়তান বলতে মানা করেছি। আল্লাহর রহমতে আমার ছেলেমেয়েরা আমার গর্ব হবে। আমি টের পাই।'
পদ্মজা ফিক করে হেসে ফেললো। বললো,’পুলিশ হয়ে ক্রাইম কিংয়ের জন্য কাঁদছেন!’
পদ্মজা রূপকথাকে বুকের সাথে চেপে ধরে। পদ্মজার গায়ের মিষ্টি ঘ্রাণে রূপকথা ডুবে যায়। মনে হচ্ছে,সে তার মাকে জড়িয়ে ধরেছে। তার কান্নার বেগ বাড়ে। পদ্মজা রূপকথার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,' এই ব্যাপারে আর কাউকে কিছু বলো না। আজ বাড়ি চলে যাও।'
পদ্মজার প্রশ্নে হেমলতা দাঁড়িয়ে পড়লেন। শুকনো গলায় জবাব দেন, ‘জানি না। খাওয়ার সময় কথা বলতে নেই।’
নুড়ি মাথা নাড়িয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো। পদ্মজা চোখ ছোট করে বললো,' কী হলো?'